সম্পাদক পরিচিতি
ইতিহাসচিন্তার খন্ড সমূহ
অক্ষয়কুমার দত্তের ‘ভারতবর্ষীয় উপাসক-সম্প্রদায়’ বাঙালির প্রথম সচেতন গবেষণাগ্রন্থ। এ খ-ে পুরো গ্রন্থটি সংকলিত হয়েছে। এ গ্রন্থে অক্ষয়কুমার ভারতের বিভিন্ন উপাসক সম্প্রদায়ের আচার-আচরণ, রীতি-নীতি, ধর্মীয় ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান বর্ণনা করেছেন। তবে এ সবের বর্ণনায় তিনি যেরূপ যুক্তিবাদী মনোভাবের পরিচয় দিয়েছিলেন, প্রাচীন হিন্দুদের গৌরব এবং অর্জনের বর্ণনায় সেরূপ দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিতে পারেননি। এছাড়া ভারতে ইংরেজ শাসনের প্রভাব সম্পর্কে তাঁর বক্তব্যে কিছুটা পরস্পরবিরোধিতা লক্ষ করা যায়। তবু গ্রন্থটি বাঙালির ইতিহাসচর্চায় একটি উল্লেখযোগ্য অবদান।
ইতিহাস বিষয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের ষোলোটি রচনা এ খ-ে স্থান পেয়েছে। এ গ্রন্থে সংকলিত দুটো প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ ভারতীয় সভ্যতার মূল প্রবণতা সম্পর্কে লিখেছেনÑ ইতিহাসের প্রারম্ভে আর্য-অনার্যদের মধ্যে সংঘাত থাকলেও পরবর্তীকালে এক ধরনের যুগবন্ধন রচিত হয় এবং এর ফলে যে সভ্যতার পত্তন হয় তা হিন্দুসভ্যতা। কিন্তু দুটো ধারা একত্র হলেও এক ধরনের টানাপোড়েন অব্যাহত থাকে। তিনি ভারতবাসীর মধ্যে একই সঙ্গে নিজত্ববোধ ও আন্তর্জাতিকতাবোধে অনুপ্রাণিত হওয়ার প্রবণতা লক্ষ করেন।
১৮৭০ সালে বাঙালির নিজস্ব ইতিহাস-চেতনার আদিপর্বের শুরু। এ সময়ের ইতিহাসচিন্তার মূল বৈশিষ্ট্য ছিল জাতীয়তাবাদ বা স্বাজাত্যবোধ। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় ছিলেন এ ধারার অন্যতম প্রবক্তা। ঔপনিবেশিক শাসনের যথার্থতা প্রমাণের জন্যে বিদেশি লেখকরা ভারতীয়দের অর্জনকে অবমূল্যায়ন করতেন। এরই প্রতিক্রিয়া-স্বরূপ এ স্বাজাত্যবোধের সূত্রপাত। অক্ষয়কুমারের ঐতিহাসিক রচনাগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় : মধ্যযুগের বাংলার ইতিহাস, প্রাচীন বাংলার ইতিহাস এবং বাংলার শিল্প-সংক্রান্ত রচনা। এ খ-ে তাঁর ‘গৌড়ের কথা’ ও ‘সিরাজউদ্দৌলা’ গ্রন্থ দুটি অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
মহেঞ্জোদারো সভ্যতার আবিষ্কারক হিসেবে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষভাবে পরিচিত। ইতিহাস বিষয়ে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ ‘বাঙ্গালার ইতিহাস’ ও ‘উড়িষ্যার ইতিহাস’। এ খ-ে তাঁর ‘বাঙ্গালার ইতিহাস’ গ্রন্থটি সংকলিত হয়েছে। গ্রন্থটির প্রথম খ-ে প্রাচীনকাল থেকে বখ্তিয়ার খল্জির বিজয় পর্যন্ত বাঙ্গালার রাজনৈতিক ইতিহাসের ধারাবাহিক বর্ণনা রয়েছে। দ্বিতীয় খ-ে বখ্তিয়ারের বিজয় থেকে ১৫৭৬ সাল পর্যন্ত বাংলায় মুসলিম শাসনের ধারাবাহিক ইতিহাস আলোচনা করেছেন। রাজনৈতিক ইতিহাস হিসেবে প্রথম খ-ে যে ধরনের অপূর্ণতা রয়েছে দ্বিতীয় খ-ে তা নেই।
নীহাররঞ্জন রায় ছিলেন বিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি ঐতিহাসিক। ‘বাঙ্গালীর ইতিহাস : আদিপর্ব’ গ্রন্থটি তাঁর শ্রেষ্ঠ প্রকাশনা। এ গ্রন্থ পনেরোটি অধ্যায়ে বিভক্ত। এর মধ্যে সাতটি অধ্যায় (১-৩, ৮-১০ এবং ১৫) এ খ-ে গ্রহণ করা হয়েছে। অপর অধ্যায়গুলো (৪-৭ ও ১১-১৪) অন্য সংকলনগুলোতে স্থান পেয়েছে। একজন ভাষ্যকার যথার্থই বলেছেন, বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্যে, আলোচনার ব্যাপ্তিতে এবং দৃষ্টির গভীরতার দিক থেকে অন্য কোনো গ্রন্থ এর সঙ্গে তুলনীয় নয়।
রমেশচন্দ্র মজুমদার খ্যাতিমান বাঙালি ঐতিহাসিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর গ্রন্থগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল চার খ-ে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের ইতিহাস’। এ গ্রন্থে প্রথম খ-টি (প্রাচীন যুগ) সংকলিত হয়েছে। খ-টিতে রয়েছে ২২টি পরিচ্ছদ। এসব পরিচ্ছদে বাংলাদেশ, বাঙালি জাতি, প্রাচীন ইতিহাস, গুপ্তযুগ, পাল সা¤্রাজ্য, পাল রাজ্যের ধ্বংস, বর্ম রাজবংশ, সেন রাজবংশ, বাংলার শেষ স্বাধীন রাজ্য, রাজ্যশাসন পদ্ধতি, ভাষা ও সাহিত্য, ধর্ম, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, শিল্পকলা, বাংলার বাইরে বাঙালি, বাঙালি জাতি প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়েছে।
এ গ্রন্থে ‘বাংলাদেশের ইতিহাস’, দ্বিতীয় খ- (প্রাচীন যুগ) সংকলিত হয়েছে। রমেশচন্দ্র মজুমদার এ খ-ের মূল সম্পাদক এবং ছয়টি পরিচ্ছেদের লেখক। পরিচ্ছেদগুলোতে আলোচিত হয়েছে মুঘল শাসনামলে বাংলা, বাংলায় নবাবি আমল, মুঘলযুগের উত্তরার্ধের প্রশাসনিক কাঠামো, মধ্যযুগে আর্থ-সামাজিক অবস্থা, ধর্ম, শিল্পকলা প্রভৃতি। ধর্ম ও সমাজ সম্পর্কিত পরিচ্ছেদে তিনি হিন্দু ও মুসলিম সংস্কৃতি আলোচনা করেন। গ্রন্থটির এক থেকে আট ও পনেরো পরিচ্ছেদ শ্রী সুখময় মুখোপাধ্যায় এবং ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ পরিচ্ছেদ ড. সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা।
এ গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে রমেশচন্দ্র মজুমদারের ‘বাংলাদেশের ইতিহাস’, তৃতীয় খ- (আধুনিক যুগ)। এতে ১৭৬৫ থেকে ১৯০৫ সাল পর্যন্ত সময়ের ইতিহাস আলোচিত হয়েছে। এ গ্রন্থ দু’টি অংশে বিভক্ত। প্রথম অংশে রাজনৈতিক ইতিহাস এবং দ্বিতীয় অংশে স্থান পেয়েছে বাংলার নবজাগরণ। প্রথম অংশে আলোচিত হয়েছে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠা, এর সম্প্রসারণ ও সিপাহি যুদ্ধ। দ্বিতীয় অংশে বাংলায় আধুনিক শিক্ষার প্রবর্তন, ধর্ম ও সমাজ-সংস্কার আন্দোলন, সাহিত্য ও সংবাদপত্র, নাটক, সংগীত, শিল্পকলা এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের পটভূমি।
এ গ্রন্থে স্থান পেয়েছে রমেশচন্দ্র মজুমদারের ‘বাংলাদেশের ইতিহাস’, চতুর্থ খ- (মুক্তিসংগ্রাম)। এতে আলোচিত হয়েছে ১৯০৫ সালের পরবর্তীকালে ভারতের মুক্তি-সংগ্রামে বাংলাদেশের অবদানÑস্বদেশি আন্দোলন, স্বদেশি আন্দোলন ও ভারতীয় রাজনীতি, সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবী দলের অভ্যুত্থান, সরকারের দমননীতি, অসহযোগ আন্দোলন ও ১৯৪৭ সালে ভারতবিভক্তি। এ অংশের আলোচনায় আরো স্থান পেয়েছে সাহিত্য, সাময়িকপত্র, শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, সমাজ ও কৃষি। বাংলা ও ভারতের ইতিহাসে স্বদেশি আন্দোলনের গুরুত্ব প্রসঙ্গে রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন, প্রকৃতপক্ষে এ আন্দোলনই ভারতের মুক্তি সংগ্রামের অগ্রদূত।
ডক্টর মুহম্মদ এনামুল্ হকের ‘পূর্ব্ব-পাকিস্তানে ইস্লাম’ গ্রন্থটি এ খ-ে সংকলিত হয়েছে। এতে লেখক উল্লেখ করেছেন পূর্ব পাকিস্তানে ইসলাম প্রচারের ইতিহাস প্রকৃতপক্ষে অবিভক্ত বাংলার মুসলিম ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। বইটির আটটি অধ্যায়ে বাংলায় ইসলাম বিস্তারে মুসলিম ক্ষাত্রশক্তির প্রভাব, ইসলামের বিরুদ্ধে হিন্দুধর্মের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বৈষ্ণব মতবাদের উদ্ভব ও নেতাদের অভিজ্ঞতা এবং এর বিরুদ্ধে ইসলামের প্রতিক্রিয়া, ‘লৌকিক ইসলাম’-এর উদ্ভব এবং এর রূপ, সংস্কার আন্দোলন, রাষ্ট্রীয় জীবনে ইসলামের প্রভাব প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়েছে।
ড. আবদুল করিমের ‘মুর্শিদকুলী খান ও তাঁর যুগ’ গ্রন্থটি এ খ-ে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বইটির পাঁচটি পরিচ্ছেদে উঠে এসেছে বাংলার ইতিহাসে মুর্শিদকুলী খানের শাসন আমলের গুরুত্ব, মুর্শিদকুলীর জীবনী, তাঁর আমলে বিচার, প্রশাসনিক ও রাজস্ব ব্যবস্থা, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ও অন্যান্য ইউরোপীয় কোম্পানির সঙ্গে মুর্শিদকুলীর সম্পর্ক, মোগল সম্রাটের কাছ থেকে সনদ লাভ এবং এ সনদে প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধাগুলো। এছাড়া বাংলার অর্থনীতি ও সামাজিক জীবনে মুর্শিদকুলীর শাসনের প্রভাবও এতে আলোচিত হয়েছে।
এ গ্রন্থে স্থান পেয়েছে ড. মুহম্মদ আবদুর রহিমের ‘বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস’ বইটির প্রথম খ-। বারটি অধ্যায়ে বিভক্ত বইটিতে ‘বাঙ্গালা’ নামের উৎপত্তি, বাংলায় মুসলমান জনগোষ্ঠী ও বহিরাগতদের সংখ্যা, বাংলায় ইসলাম বিস্তারে সুফি-সাধক ও সুলতানদের ভূমিকা, হিন্দু ও মুসলমানের শিক্ষাব্যবস্থা এবং মুসলিম শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলা সাহিত্যের উন্নতি, মুসলমানদের সামাজিক জীবন, ইসলাম ও হিন্দুধর্মের মধ্যে সম্পর্ক, হিন্দুদের সামাজিক জীবন, যুদ্ধকৌশল ও অর্থনৈতিক জীবন প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এ গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে ড. মুহম্মদ আবদুর রহিমের ‘বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস’ বইটির দ্বিতীয় খ-। বইটির ষোলোটি অধ্যায়ের বিষয়বস্তুর বিন্যাস প্রথম খ-ের অনুরূপ। তবে চারটি বিষয় নতুনভাবে সংযোজিত। এগুলো হলো মুসলিম শাসন আমলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা, রাজস্ব ব্যবস্থা, স্থাপত্য এবং নারীর মর্যাদা। মুসলিম সমাজ সম্পর্কে আলোচনা এ খ-ে অনেক বেশি বিস্তারিত। রাজস্ব ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে মুর্শিদকুলী খানের বন্দোবস্ত। রয়েছে মুসলিম শাসন আমলে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলার সমৃদ্ধির বিস্তারিত বিবরণ।
এ খ-ে সংকলিত হয়েছে মমতাজুর রহমান তরফদারের গ্রন্থ ‘হোসেন শাহী আমলে বাংলা : একটি সামাজিক রাজনৈতিক পর্যেষণা’। বইটির দশটি পরিচ্ছেদে উঠে এসেছে বাংলায় মুসলিম শাসনের প্রাথমিক পর্যায়ের, বিশেষত ইলিয়াস শাহী আমলের সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় জীবন, চারুকলা, স্থাপত্যশিল্প ও মুদ্রাতত্ত্বের বিভিন্ন দিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পরিবর্তন, হোসেন শাহী রাজবংশের বর্ণনা, শাসনব্যবস্থার বিস্তারিত বিবরণ, অর্থনৈতিক অবস্থা, ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মীয়ব্যবস্থা, জীবনধারা প্রভৃতি। তরফদারের মতে, এ আমল ছিল বাংলার ইতিহাসের সৃজন পর্ব।
এ খ-ে মুদ্রিত হয়েছে মমতাজুর রহমান তরফদারের গ্রন্থ ‘ইতিহাস ও ঐতিহাসিক’। এ গ্রন্থের প্রথম তিনটি পরিচ্ছেদে আলোচিত হয়েছে প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাঙালি সংস্কৃতি, আত্মপরিচয়ের প্রসঙ্গ, ধর্মব্যবস্থা ও সমাজকাঠামো, ইসলাম প্রচারে সমস্যা ও শ্রেণিগঠন। প্রবন্ধগুলোতে উঠে এসেছে বাংলার মধ্যযুগের এবং প্রাক-মধ্যযুগের অর্থনৈতিক অবস্থা। এছাড়া ইতিহাসতত্ত্ব ও দর্শন বিষয়ে নয়টি প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে। এগুলোতে বিশ্লেষিত হয়েছে ইতিহাসের কাল-বিভাজনের সমস্যা, আর্থ-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসের সম্পর্ক, ইন্দো-মুসলিম ইতিহাসশাস্ত্রের বৈশিষ্ট্য, ব্যক্তিকেন্দ্রিক মনোগ্রাফ প্রভৃতি বিষয়।
রজতকান্ত রায়ের ‘পলাশীর ষড়যন্ত্র ও সেকালের সমাজ’ বইটি এ খ-ের উপজীব্য। এ গ্রন্থে লেখক পলাশী ষড়যন্ত্রের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁর বর্ণনা থেকে তৎকালীন বাংলার সমাজ ও রাজনীতির পূর্ণ চিত্র পাওয়া যায়। প্রসঙ্গক্রমে তিনি পলাশী বিপ্লবের পর বিদেশি শাসক, স্থানীয় আমলা ও গোমস্তাদের অত্যাচার এবং বিশেষত ১৭৭০ সালের দুর্ভিক্ষ সম্পর্কেও বিবরণ দিয়েছেন। পাঁচটি পরিচ্ছেদে বিন্যস্ত বইটির প্রবন্ধগুলোর শিরোনামÑ গহরায় আগুন, নবাব দরবার ও রাজ-রাজড়া, দুষ্ট চক্র, পলাশীর ষড়যন্ত্র ও ষড়যন্ত্রের পরিণাম।
সংঘবদ্ধভাবে নিম্নবর্গের ইতিহাস বা সাবলটার্ন স্টাডিজের যাত্রা শুরু ১৯৮২ সালে। এর প্রধান উদ্যোক্তা রণজিৎ গুহ। এ সংকলনে নিম্নবর্গের ইতিহাস বিষয়ে আটজন লেখকের দশটি প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে। প্রথম প্রবন্ধটি এ গ্রন্থের ভূমিকা, লিখেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এতে রয়েছে নিম্নবর্গের এ ধারণাটিকে নতুনভাবে উপস্থাপন, এর ফলে সৃষ্ট নতুন সম্ভাবনা ও সমস্যা প্রভৃতি বিষয়। দ্বিতীয় প্রবন্ধে রণজিৎ গুহ নিম্নবর্গের ইতিহাসের সংজ্ঞা, প্রকৃতি ও যৌক্তিকতার ব্যাখ্যা করেছেন। দিয়েছেন নিম্নবর্গের ইতিহাসবিদদের করণীয় সম্পর্কে পরামর্শ।
এ খ-ে ড. মুঈন উদ-দীন আহমদ খানের ‘ফরায়েজী আন্দোলনের ইতিহাস’ বইটি সংকলিত হয়েছে। গ্রন্থটিতে ড. খান ফরায়েজী আন্দোলনের বিভিন্ন দিক, যথা উনিশ শতকে বাংলার মুসলমানদের সামাজিক ও ধর্মীয় অবস্থা, ফরায়েজী আন্দোলনের ধর্মীয় মতাদর্শ, এ আন্দোলনের প্রতি তাইউনী বিরোধিতা, আন্দোলনের সামাজিক সংগঠন এবং এর বিস্তৃতি প্রভৃতি আলোচনা করেছেন। বিশিষ্ট কয়েকজন ফরায়েজী নেতার সংক্ষিপ্ত পরিচয়ও তুলে ধরেছেন। এছাড়া বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফরায়েজী বসতি সম্পর্কে মাঠ পর্যায়ের একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছেন।